ইসলাম নিজেকে মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম জীবনব্যবস্থা হিসেবে দাবি করে, এবং কোরআনকে আল্লাহর নির্ভুল, চূড়ান্ত ও অপরিবর্তনীয় বাণী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু গভীর বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোরআনের অনেক দাবি যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিকভাবে অসঙ্গতিপূর্ণ। এটি শুধুমাত্র ইসলামিক নৈতিকতার সীমাবদ্ধতার বিষয় নয়, বরং ধর্মগ্রন্থটি বিজ্ঞান, যুক্তি ও সাধারণ বাস্তবতাকেও চ্যালেঞ্জ করে।
কোরআন দাবি করে যে “আল্লাহ সব কিছু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন” (সূরা যারিয়াত ৫১:৪৯)। কিন্তু আধুনিক জীববিজ্ঞান আমাদের দেখিয়েছে যে প্রকৃতিতে বহু একক-প্রজননকারী জীব আছে, যারা নিজেদের ক্লোন তৈরি করে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রজনন করে। একইভাবে, কোরআন বলে যে প্রতিটি জীব “সম্প্রদায়ে” বাস করে (সূরা আনআম ৬:৩৮), অথচ বাস্তবে বহু প্রাণী একাকী জীবনযাপন করে, যেমন চিতা বাঘ, ভালুক বা নির্দিষ্ট প্রজাতির সরীসৃপ।
কোরআন বলে যে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে “মাটি” বা “মাটির কাদা” থেকে (সূরা আল-হিজর ১৫:২৬)। কিন্তু বিবর্তনবিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে মানুষসহ সব জীবের উৎস এককোষী জীব। মাটি বা কাদা থেকে সরাসরি জীব সৃষ্টি হওয়ার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কোরআনের আরেকটি দাবি হলো, “গরুর পেটের মধ্যে রক্ত ও মলমূত্রের মাঝখান থেকে তোমাদের জন্য বিশুদ্ধ দুধ উৎপন্ন করা হয়” (সূরা নাহল ১৬:৬৬)। আধুনিক প্রাণীবিজ্ঞান অনুযায়ী, দুধ গরুর রক্ত থেকে আসে, তবে এটি কোনোভাবেই মলমূত্রের সংস্পর্শে থাকে না।
কোরআনের অন্যতম অদ্ভুত দাবি হলো, সূর্য ও চাঁদ একে অপরকে অনুসরণ করে এবং সূর্যের একটি “স্থির স্থান” রয়েছে (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৩৮)। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান বলে যে সূর্য কোনো নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থাকে না, বরং এটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করছে।
আরেকটি ত্রুটি হলো, কোরআন বলে যে “তারা (নক্ষত্র) পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের আকাশে স্থাপন করা হয়েছে” (সূরা মুলক ৬৭:৫)। আধুনিক বিজ্ঞান অনুযায়ী, নক্ষত্র আমাদের গ্যালাক্সির দূরবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এবং এগুলো বিশাল আকারের উজ্জ্বল বস্তু, যা পৃথিবীর আকাশে স্থাপন করা “আলংকারিক বাতি” নয়।
কোরআনের মতে, পাহাড়গুলোকে পৃথিবীতে “স্থির রাখার জন্য পেরেকের মতো বসানো হয়েছে” (সূরা আম্বিয়া ২১:৩১)। কিন্তু বাস্তবে, পর্বত সৃষ্টি হয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে, এবং এগুলো ভূকম্পন বা ভূমিকম্প প্রতিরোধ করে না; বরং অনেক সময় ভূমিকম্পের কারণ হয়।
আরেকটি দাবি হলো, “আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন” (সূরা নূর ২৪:৪৩)। অথচ আমরা জানি, বৃষ্টিপাত সম্পূর্ণ একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা সূর্যালোক, বাষ্পীভবন ও ঘনীভবনের কারণে ঘটে।
কোরআনে বলা হয়েছে, “মানুষের বীর্য উৎপন্ন হয় পিঠের হাড় ও বুকের হাড়ের মাঝখান থেকে” (সূরা তারিক ৮৬:৬-৭)। কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে শুক্রাণু উৎপন্ন হয় পুরুষের অণ্ডকোষে, যা পিঠের হাড় বা বুকের হাড়ের মাঝখানে অবস্থিত নয়।
অন্যদিকে, কোরআন বলে যে মানুষের ভ্রূণ গঠনের সময় প্রথমে “হাড় তৈরি হয়, এরপর মাংস” (সূরা মুমিনুন ২৩:১৪)। কিন্তু আধুনিক ভ্রূণতত্ত্ব বলছে, হাড় ও মাংস একসঙ্গে গঠিত হয়, এবং প্রথমে টিস্যু তৈরি হয়, তারপর হাড়ের গঠন হয়।
কোরআনের মতে, “সূর্য অস্ত যায় এক কাদা পানির ঝর্ণায়” (সূরা কাহাফ ১৮:৮৬)। এটি স্পষ্টতই ভুল, কারণ সূর্য কখনো মাটির কাছে অস্ত যায় না, এটি শুধুমাত্র পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে দৃষ্টিগোচর হয়।
আবার, কোরআনে বলা হয়েছে, “চাঁদ নিজে আলো বিকিরণ করে” (সূরা নূর ২৪:৩৫), অথচ আমরা জানি চাঁদ নিজে আলো উৎপন্ন করে না; এটি সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে।
কোরআন নিজেকে “নির্ভুল ও পরিপূর্ণ জ্ঞান” হিসেবে দাবি করলেও, এটি স্পষ্টতই বহু বৈজ্ঞানিক ও যৌক্তিক অসঙ্গতিতে ভরা। আধুনিক যুগে বিজ্ঞানের অগ্রগতির মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে কোরআনের অনেক তথ্য পুরাতন আরবীয় বিশ্বাস ও কুসংস্কারের ভিত্তিতে গঠিত। কোনো সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার দেওয়া সত্য ধর্মগ্রন্থে এত ভুল থাকা সম্ভব নয়। তাই কোরআনের সত্যতা নিয়ে যুক্তিপূর্ণ প্রশ্ন তোলা জরুরি।
সত্যের সন্ধানে প্রত্যেক মানুষের উচিত মুক্ত চিন্তা করা, প্রশ্ন করা, এবং বিজ্ঞানের সত্যতা মেনে নেওয়া। সত্য কখনো প্রশ্নের ভয়ে পালিয়ে যায় না, বরং যুক্তি ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে।
__________ডোরিয়ান সেজ