আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দার মধ্যেও আফগানিস্তানে তালেবান সরকার শরিয়া আইনের কঠোরতম দণ্ড রজম (পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড) পুনরায় চালু করেছে। সম্প্রতি দেশটির একটি অজ্ঞাত স্থানে জনসমক্ষে এক নারী ও এক পুরুষকে পাথর মেরে হত্যা করা হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বর্বর শাস্তির পুনরাবৃত্তি
তালেবান সরকারের নেতৃত্বাধীন আদালত ব্যভিচারের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই নির্মম শাস্তি কার্যকর করেছে। শরিয়া আইনের ব্যাখ্যার নামে মধ্যযুগীয় এই শাস্তির ব্যবহার আফগানিস্তানে নৃশংসতা ও নিপীড়নের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।
আন্তর্জাতিক নিন্দা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এই শাস্তিকে অমানবিক, বর্বর এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই ধরনের শাস্তি শুধুমাত্র নিষ্ঠুর নয়, এটি মৌলিক মানবাধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”
আইন নয়, বরং তালেবানের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার
বিশেষজ্ঞদের মতে, তালেবান এই শাস্তির মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক ও আদর্শিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। সাধারণ মানুষের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করাই তাদের মূল লক্ষ্য। বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, ন্যায়বিচার ও প্রমাণের মানদণ্ড উপেক্ষা করেই এই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, যা শুধু তালেবানের শাসনব্যবস্থার নৃশংসতাকে স্পষ্ট করে তুলছে।
আফগান জনগণের মধ্যে আতঙ্ক
দেশটির সাধারণ জনগণ এই ধরনের শাস্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে। বিশেষ করে নারীদের অবস্থা আরও ভয়াবহ, কারণ তালেবানের কঠোর শাসনের ফলে তারা আইনি ও সামাজিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের করণীয়
বিশ্ব নেতারা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো যদি তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তবে মানবাধিকারের এই চরম লঙ্ঘন চলতে থাকবে। কূটনৈতিক চাপ, নিষেধাজ্ঞা এবং আফগান জনগণকে সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বকে এই বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
তালেবান শাসনের অধীনে আফগানিস্তান ক্রমশই এক অন্ধকার যুগে প্রবেশ করছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে, এই নিষ্ঠুরতা আরও প্রকট হবে।