রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সাগর হোসেনকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযোগ? তিনি একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেছেন, যা প্রশাসনের মতে, “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে” এবং “বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে।”
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সত্যিই কি সাগরের অপরাধ এতটাই গুরুতর যে তাকে আবাসন থেকে বহিষ্কার করতে হবে? তিনি কি সত্যিই কারও বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিয়েছেন? নাকি শুধুমাত্র একটি মতামত প্রকাশ করেছিলেন, যা কারও পছন্দ হয়নি?
বাংলাদেশের সংবিধান বাক্স্বাধীনতার অধিকার দেয়, কিন্তু বাস্তবে আমরা বারবার দেখছি, যে কেউ একটু অন্যরকম কিছু বললেই তাকে দমন করার চেষ্টা করা হয়। সাগরের ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে। তিনি একজন শিক্ষার্থী, যার কাজই হচ্ছে চিন্তা করা, বিশ্লেষণ করা, প্রশ্ন তোলা। যদি একটি পোস্ট শেয়ার করাই অপরাধ হয়, তাহলে কি আমরা ধরে নেবো যে বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত চিন্তার কোনো জায়গা নেই?
সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে। আজ সাগর বহিষ্কৃত হয়েছে, কাল আরেকজন হবে। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় আর বিতর্ক ও জ্ঞানচর্চার স্থান থাকবে না, বরং তা হয়ে উঠবে একরকম কারাগার, যেখানে শুধু একমুখী চিন্তাধারা টিকে থাকবে।
আমরা এই অন্যায় বহিষ্কারের তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই, তারা যেন দ্রুত এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে। একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এভাবে ধ্বংস করা যায় না, শুধুমাত্র মতপ্রকাশের কারণে। যদি সত্যিকারের ন্যায়বিচার থাকে, তবে সাগরকে তার হলে ফিরে আসার সুযোগ দিতে হবে।

ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট শেয়ার ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাগর হোসেনের সিট বাতিল ও হল থেকে বহিষ্কার সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাগর হোসেনের ফেসবুক পোস্ট, যেখানে তিনি আসাদ নূরের একটি বিতর্কিত মতামত শেয়ার করেছেন। এই পোস্টের জেরে তাকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।