পথপর্শক
পথপর্শক
11 Mar 2025 (2 months ago)

এই ‘পুরুষদের’ পরিবারে মা-বোন নাই? এরা এতোটা বেপরোয়া কেন? || Asad Noor

Listen to this article

আসাদ নূরের ভিডিওর বিশদ ব্যাখ্যা

আসাদ নূর তার ভিডিওতে মূলত ধর্মীয় পরিচয়ের সুবিধাবাদী ব্যবহার, নারীদের পোশাক নিয়ে সমাজের দ্বৈতনীতি, এবং ধর্মীয় বক্তাদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে দেখিয়েছেন, কীভাবে কিছু মানুষ ধর্মকে ব্যবহার করে নিজেদের ভুলত্রুটি আড়াল করার চেষ্টা করে, আবার নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতা খর্ব করার কাজে ধর্মকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী মোস্তফা আসিফ অর্ণব – (00:05)

ভিডিওর একেবারে শুরুতেই (00:05) আসাদ নূর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী, মোস্তফা আসিফ অর্ণবের ঘটনা তুলে ধরেন। অর্ণব সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন ও একটি মেয়ের চলাফেরা এবং পোশাক নিয়ে একটি মন্তব্য করেন। এই মন্তব্য মেয়ের কাছে আপত্তিকর মনে হয়, কারণ তিনি নারীদের স্বাধীন চলাফেরার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন।

কিন্তু এই ঘটনায় চমকপ্রদ দিক হলো, যখন তার বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হয়, তখন তিনি তার ধর্মীয় পরিচয় সামনে এনে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। তিনি দাবি করেন যে, তিনি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কথা বলেছেন এবং এ কারণে তার বিরুদ্ধে কথা বলা ইসলামবিরোধী আচরণ। বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি—কিছু ধর্মীয় ব্যক্তি ও তার সমর্থকরা তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে এবং উল্টো যারা তার বিরোধিতা করছিল, তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।

আসাদ নূর এই ঘটনাকে একটি বড় উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন যে, কীভাবে সমাজে ধর্মীয় পরিচয় ব্যবহার করে বিতর্কিত ব্যক্তিরা নিজেদের দোষ এড়িয়ে যেতে পারে। অথচ যদি অন্য কেউ ধর্মীয় নেতাদের বা ইসলামপন্থীদের সমালোচনা করত, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হতো। এই দ্বৈতনীতি নিয়েই তিনি প্রশ্ন তোলেন।

খলেদ মাহমুদ হৃদয় খান ও হিজাব বিতর্ক – (02:39)

এরপর (02:39) আসাদ নূর আরেকটি চরিত্রের কথা বলেন—খালেদ মাহমুদ হৃদয় খান। এই ব্যক্তি বিভিন্ন সময় নারীদের পোশাক এবং শালীনতা নিয়ে মন্তব্য করেছেন।

ভিডিওতে (04:24) একটি বিশেষ ঘটনা তুলে ধরা হয়, যেখানে দেখা যায়, হৃদয় খান একজন হিন্দু শিশুকে হিজাব পরার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিষয়টি বেশ বিতর্ক সৃষ্টি করে, কারণ এটি শুধু ধর্মীয় হস্তক্ষেপ নয়, বরং এটি সংখ্যালঘুদের উপর চাপ সৃষ্টি করার একটি কৌশল।

আসাদ নূর ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে কিছু মানুষ ইসলামের নামে নারীদের পোশাক নিয়ে অহেতুক কথা বলে, অথচ নিজের জীবনে নৈতিকতার কোনো বালাই রাখে না। নারীদের কী পরা উচিত, কীভাবে চলা উচিত—এটা ঠিক করে দেওয়ার জন্য কিছু পুরুষ নিজেদের দায়িত্ব মনে করে, অথচ তারা নিজেদের চরিত্র নিয়ে ভাবে না।

তিনি আরও বলেন, যদি কেউ ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে পোশাকের ব্যাপারে কথা বলতে চায়, তাহলে সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার হতে পারে। কিন্তু যখন সেটিকে সমাজে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়, তখন তা স্বাধীনতার পরিপন্থী হয়ে দাঁড়ায়।

নারীদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা – (08:51)

আসাদ নূর এই ঘটনাগুলোর আলোকে (08:51) নারীদের নিরাপত্তা এবং সমাজে তাদের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, নারীদের স্বাধীনতা প্রতিনিয়ত সংকুচিত করা হচ্ছে, এবং এর প্রধান কারণ হলো ধর্মীয় বক্তাদের বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য। ওয়াজ মাহফিল ও সামাজিক মাধ্যমে অনেক ধর্মীয় বক্তা এমন সব কথা বলেন, যা সরাসরি নারীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায়। তারা দাবি করেন, নারীরা যদি শালীন পোশাক না পরে, তাহলে তাদের উপর নির্যাতন হওয়াটা স্বাভাবিক!

এই বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মীয় বক্তারা আসলে কী করতে চায়? আসাদ নূরের মতে, এটি একধরনের মানসিক প্রোগ্রামিং, যার মাধ্যমে নারীদের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে পুরুষদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, একজন পুরুষ যদি নারীদের উত্ত্যক্ত করে, ধর্ষণের হুমকি দেয়, বা মৌলিক অধিকার হরণ করে, তাহলে সেটার জন্য ওই ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া উচিত। কিন্তু ধর্মীয় নেতারা বরং উল্টো নারীদের দোষ দেন—যেন সব সমস্যার মূল কারণ নারীর পোশাক এবং স্বাধীনতা।

সমাধানের পথ – (10:22)

ভিডিওর শেষ অংশে (10:22) আসাদ নূর দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমাধানের প্রস্তাবনা দেন:

১. ওয়াজ মাহফিলে নারীবিদ্বেষী বক্তব্য সেন্সর করতে হবে

  • ধর্মীয় বক্তাদের ওয়াজ মাহফিলে নারী বিদ্বেষী কথা বলার স্বাধীনতা দেওয়া উচিত নয়। তারা যখন প্রকাশ্যে নারীদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তখন তা সরাসরি ঘৃণা ছড়ানোর শামিল। তাই এসব বক্তব্য সেন্সর করা জরুরি।

২. বিদ্বেষ ছড়ানো কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে

  • যারা ধর্মের নামে নারী নির্যাতন বা বৈষম্যকে উসকে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে, সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা এ ধরনের বক্তব্য প্রচার করে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এভাবে ধর্মের দোহাই দিয়ে অন্যদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে না পারে।

উপসংহার

এই ভিডিওতে আসাদ নূর দেখিয়েছেন, কীভাবে ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়ে কিছু মানুষ নিজেদের অপরাধ লুকাতে চায়, আবার নারীদের স্বাধীনতার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

তিনি বারবার বলেছেন, নারীদের মুক্তি এবং সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হলে কেবল সামাজিকভাবে নয়, বরং রাষ্ট্রীয়ভাবেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ওয়াজ মাহফিলে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের লাগাম টানা দরকার, এবং যারা ধর্মের নামে অন্যদের জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের রুখে দিতে হবে।

তিনি বিশ্বাস করেন, ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া বন্ধ না হলে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীরা যদি স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে না পারে, তাহলে সমাজ কখনো এগোবে না।

আপনি যদি ভিডিওর আরও নির্দিষ্ট কোনো অংশ জানতে চান, তাহলে আমাকে জানান।

162 Views
No Comments
Share
1
Author Image
ধর্ষন প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
-
👍🏻 - -
Author Image
বাড়াবাড়ি ভালো না – সম্প্রতি বইমেলার তসলিমা নাসরিনের বই
-
👍🏻 - -
Author Image
মাহরাম ছাড়া একটা মেয়ের সফর জায়েজ নয়।
-
👍🏻 - -
রংপুরের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক হিন্দু মেয়েকে এক মুমিন ধর্ষণ করেছে।
-
👍🏻 - -
Author Image
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে একটি মাদরাসার দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, মাদরাসার শিক্ষক গ্রেপ্তার
-
👍🏻 - -
বাঙ্গু মুমিন তার দুই মেয়েকে এক সাথে ধর্ষণে ভিডিও
-
👍🏻 - -
Author Image
গভীর রাতে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘর থেকে মসজিদের ইমাম আটক, অতঃপর…
-
👍🏻 - -
পরকীয়ার করতে গিয়ে ধরা খেলেন মসজিদের আহ্বায়ক!
-
👍🏻 - -
Author Image
সাভারের আশুলিয়ায় চাচা কর্তৃক শিশু ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা: পলাতক অভিযুক্ত
-
👍🏻 - -
প্রকাশ্যে বিকৃত মানসিকতার শিকার: সমাজের নীরবতা আর কত দিন?
-
👍🏻 - -
Author Image
১০ মার্চ ২০২৫, একদিনে নতুন ১২টি ধর্ষণ প্রকাশ
-
👍🏻 - -
ধর্ষণের জন্য দায়ী মেয়েরাও – আবু ত্ব-হা আদনান
-
👍🏻 - -
বিয়ের ৫ মাসপর সন্তান প্রসব করে, এতে তালাক দেন স্বামী | তারপর জানা যায় মাদ্রাসা শিক্ষক তাকে ধর্ষণ করেছে
-
👍🏻 - -
Author Image
কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মসজিদের ইমাম গ্রেপ্তার: ধর্মীয় পোশাকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা হায়েনাদের আসল চেহারা
-
👍🏻 - -
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ নারী বিদ্বেষমূলক ওয়াজ
-
👍🏻 - -
No comments to “এই ‘পুরুষদের’ পরিবারে মা-বোন নাই? এরা এতোটা বেপরোয়া কেন? || Asad Noor”