Register | Login | Refresh | Home |
ইসলামে বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন যা শুধুমাত্র দাম্পত্য সম্পর্কই নয়, বরং সামাজিক শৃঙ্খলা ও পারিবারিক কাঠামোর ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা, দয়া ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ জীবনের পথ তৈরি করে। কুরআনে বলা হয়েছে, “তাদের মধ্যে তোমাদের জন্য ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন” (সূরা রুম: ২১)।
বিয়ে ইসলামে শুধুমাত্র দেহের চাহিদা পূরণের মাধ্যম নয়; বরং এটি একটি চুক্তি, যা দু’জন ব্যক্তিকে একসঙ্গে পথ চলতে এবং পারিবারিক জীবনের দায়িত্ব গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে। নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজেও বলেছেন, “বিয়ে আমার সুন্নত, যে এটি পরিত্যাগ করবে, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।” এটি পরিবারকে সুরক্ষা দেয় এবং সমাজে নৈতিকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
পরিবার ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। বাবা-মা, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের প্রতি দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে একটি সুদৃঢ় পারিবারিক কাঠামো গড়ে ওঠে। সন্তানদের নৈতিক শিক্ষাদান, তাদের উত্তম চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখা এবং সঠিক পথনির্দেশ দেওয়া প্রত্যেক পিতামাতার দায়িত্ব। কুরআনে বলা হয়েছে, “নিজেদের ও নিজেদের পরিবারকে দোজখের আগুন থেকে রক্ষা কর” (সূরা তাহরীম: ৬)।
পারিবারিক জীবনে স্বামী ও স্ত্রীর ভূমিকা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তবে এটি কর্তৃত্বের নয়, বরং পরস্পর সহযোগিতার ভিত্তিতে পরিচালিত। স্বামী পরিবারের উপার্জন ও নিরাপত্তার জন্য দায়ী, আর স্ত্রী গৃহস্থালি ও সন্তানদের লালন-পালনের মূল দায়িত্ব পালন করেন। তবে উভয়ের মধ্যে বোঝাপড়া ও সমঝোতা থাকা অপরিহার্য।
ইসলামে পারিবারিক সম্পর্ক কেবল রক্তের বন্ধনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং দয়া, সহমর্মিতা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে তা বিস্তৃত হয়। আত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের সহযোগিতা করা ইসলামের অন্যতম শিক্ষা। রাসূল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না” (বুখারি ও মুসলিম)।
সর্বোপরি, ইসলামে বিয়ে ও পরিবার একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য ভিত্তি। এটি শুধু ব্যক্তি বা দাম্পত্য জীবন নয়, বরং সমগ্র উম্মাহর সুস্থ ও সুসংগঠিত কাঠামো গড়ে তোলে।