ইসলামের ইতিহাসে সাম্রাজ্য বিস্তার ও ন্যায়বিচারের অনন্য উদাহরণ পাওয়া যায়। ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বে ইসলাম শুধু ধর্ম প্রচারেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার দিকেও মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল।

নবী (সা.)-এর পর খোলাফায়ে রাশেদিনের শাসনামলে ইসলাম দ্রুত বিস্তার লাভ করে। আবু বকর (রা.), উমর (রা.), উসমান (রা.) ও আলী (রা.)-এর শাসনামলে মুসলিম সাম্রাজ্য পারস্য, বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের এক বিশাল অংশ এবং উত্তর আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এই বিস্তারের মূল কারণ ছিল ন্যায়বিচার, সাম্য ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা।

উমর (রা.)-এর শাসনামল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ তিনি ইসলামী সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামো সুসংহত করেন। তিনি বিভিন্ন অঞ্চলে ন্যায়বিচারের জন্য কাদির (বিচারক) নিয়োগ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, মুসলিম ও অমুসলিম সকলেই সমান আইনি সুবিধা পাবেন। তিনি জেরুজালেম বিজয়ের পর সেখানে খ্রিস্টানদের উপাসনালয় রক্ষার নির্দেশ দেন এবং কারও ওপর ধর্মীয় অনাচার চাপিয়ে দেননি।

উমাইয়া ও আব্বাসীয় খেলাফতের সময়েও ইসলামের বিস্তার ঘটে। উমাইয়াদের শাসনামলে আন্দালুস (স্পেন) পর্যন্ত ইসলামের প্রসার ঘটে এবং আব্বাসীয়দের শাসনামলে বিজ্ঞান, চিকিৎসা, দর্শন ও সংস্কৃতিতে মুসলিম বিশ্ব শীর্ষে পৌঁছে যায়।

তবে ইসলামের বিস্তার কখনো নিছক সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে হয়নি। মুসলমানদের ন্যায়পরায়ণতা, শাসকদের সুবিচার ও সাধারণ মানুষের প্রতি সদয় আচরণই অনেক অঞ্চলের জনগণকে স্বেচ্ছায় ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করেছে। ইসলামী সাম্রাজ্যের সুবিচার, প্রশাসনিক দক্ষতা ও সামাজিক সমতা ইসলামকে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হতে সহায়তা করেছে।