ইসলামে ধর্মান্তর ও ধর্মত্যাগের বিষয়ে কিছু বিতর্কিত দিক রয়েছে, যা প্রায়শই মানবাধিকারের সাথে সংঘর্ষে আসে। যদিও কুরআনের কিছু আয়াতে ধর্মের ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগের বিরোধিতা করা হয়েছে, তবে সমালোচকরা দাবি করেন যে, ইসলামী আইন ও ইতিহাসে কখনো কখনো ধর্মান্তরকে বাধ্যতামূলক বা নিরুৎসাহিত করার নজির পাওয়া যায়।

প্রথমত, কিছু সমালোচক যুক্তি দেন যে, ইসলামের ইতিহাসে এমন উদাহরণ রয়েছে যেখানে বিজিত জনগোষ্ঠীর ওপর সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে, যার ফলে তারা ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। বিশেষ করে জিজিয়া কর ব্যবস্থার কথা বলা হয়, যেখানে অমুসলিমদের জন্য এক ধরনের কর নির্ধারিত ছিল, যা মুসলিমদের দিতে হতো না। সমালোচকদের মতে, এটি পরোক্ষভাবে অমুসলিমদের ইসলাম গ্রহণের দিকে ঠেলে দেওয়ার একটি ব্যবস্থা ছিল।

দ্বিতীয়ত, ধর্মত্যাগ (রিদ্দাহ) সম্পর্কিত শাস্তি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেক ইসলামি স্কলার মনে করেন, ধর্মত্যাগের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যা কিছু হাদিসে উল্লেখিত আছে। যদিও কুরআনে সরাসরি ধর্মত্যাগের পার্থিব শাস্তির কথা বলা হয়নি, তবে কিছু ইসলামী আইনি স্কুল এটিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। সমালোচকরা মনে করেন, এটি ব্যক্তিগত স্বাধীনতার পরিপন্থী এবং বিশ্বাসের বিষয়ে চাপ প্রয়োগের সমান।

তৃতীয়ত, সমালোচকরা অনেক ইসলামী রাষ্ট্রে ধর্মান্তর সংক্রান্ত আইনের কঠোরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কিছু দেশে ধর্মত্যাগ বা ইসলাম থেকে অন্য ধর্মে পরিবর্তন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী।

এছাড়াও, কিছু উগ্র গোষ্ঠী ইসলামের নামে জোরপূর্বক ধর্মান্তরের চেষ্টা করে, যা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক হলেও সমালোচকদের হাতে ইসলামের বিরুদ্ধে একটি সমালোচনার সুযোগ তৈরি করে।

অতএব, সমালোচকরা মনে করেন যে, ইসলামের মূলনীতি ধর্মান্তরে জবরদস্তির বিরোধী হলেও, ইসলামী ইতিহাস ও আইনি ব্যাখ্যায় কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে, যা বিতর্কের জন্ম দেয়।