কাও দাই একটি ধর্ম যা ১৯২৬ সালে ভিয়েতনামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি বৌদ্ধ, তাওবাদ, কনফুসিয়ানিজম, খ্রিস্টধর্ম এবং ভিয়েতনামী লোকবিশ্বাসের সংমিশ্রণে গঠিত। যদিও এটি তার উদার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির জন্য প্রশংসিত হয়, তবে একে নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা রয়েছে।

একটি বড় সমালোচনা হলো কাও দাই ধর্মের আপাত বৈচিত্র্যময় বিশ্বাস ব্যবস্থা বাস্তবে বিভ্রান্তিকর ও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। বিভিন্ন ধর্মের উপাদান একত্রিত করার ফলে এটি একটি সুসংহত তাত্ত্বিক কাঠামো তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে অনুসারীদের জন্য এটি স্পষ্টভাবে বোঝা কঠিন হয় যে, কোন বিশ্বাস বা আচার-অনুষ্ঠান কতটা বাধ্যতামূলক বা গুরুত্বপূর্ণ।

আরেকটি সমালোচনামূলক দিক হলো এর নেতৃত্ব কাঠামো। কাও দাই গির্জা বা “পবিত্র আসন” একটি অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরিচালনা করে, যেখানে উচ্চপদস্থ ধর্মীয় নেতাদের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। এই কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ধর্মীয় কর্তৃত্ববাদিতা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে।

এছাড়াও, কাও দাই অতিপ্রাকৃত যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে, যেখানে তারা দাবি করে যে বিখ্যাত ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের আত্মারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই দাবি অনেকের কাছে বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন এবং কুসংস্কারপ্রসূত বলে মনে হয়। সমালোচকরা এটিকে এক ধরনের প্রতারণা এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টির মাধ্যম হিসেবে দেখে থাকেন।

রাজনৈতিকভাবে, কাও দাই সম্প্রদায় অতীতে ভিয়েতনামের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল, বিশেষত ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসন ও ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়। কিছু সমালোচক তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাকে ধর্মের মূল নীতিগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন।

সব মিলিয়ে, কাও দাই একটি আকর্ষণীয় ধর্মীয় আন্দোলন হলেও, এর আদর্শিক সংহতি, প্রশাসনিক গঠন এবং অতিপ্রাকৃত বিশ্বাসের উপর নির্ভরতা নিয়ে সমালোচনা বিদ্যমান।