খ্রিস্টান ধর্ম ও অন্যান্য ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক যুগে যুগে পরিবর্তিত হয়েছে এবং এটি নানা দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখা যায়, আবার কিছু ক্ষেত্রে বিরোধ এবং সংঘাতও ঘটেছে।

একদিকে, খ্রিস্টান ধর্মে সর্বজনীন ভালবাসা, দয়া এবং সহানুভূতির শিক্ষা রয়েছে, যা অন্য ধর্মগুলোর সাথে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে। বহু ধর্মতাত্ত্বিক ও দার্শনিক খ্রিস্টান চিন্তাবিদ আন্তঃধর্মীয় সংলাপের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় ভ্যাটিকান কাউন্সিল (১৯৬২-১৯৬৫) ইসলাম, হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্মসহ অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব গ্রহণের উপর গুরুত্ব দেয়।

অন্যদিকে, ইতিহাসে ধর্মীয় সংঘাতও দেখা গেছে, যেমন ক্রুসেড যুদ্ধ, ইউরোপে ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন, উপনিবেশবাদী সময়কালে খ্রিস্টান মিশনারিদের কর্মকাণ্ড, যা অনেক ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হিসেবে সমালোচিত হয়েছে। কিছু খ্রিস্টান সম্প্রদায় মনে করে যে শুধুমাত্র তাদের ধর্মই পরিত্রাণের একমাত্র পথ, যা অন্য ধর্মের অনুসারীদের সাথে সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে।

আধুনিক যুগে, বহুসংস্কৃতির সমাজে ধর্মীয় সহনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং খ্রিস্টানদের অনেক অংশ আন্তঃধর্মীয় সংলাপে অংশ নিচ্ছে। পোপ ফ্রান্সিসসহ আধুনিক খ্রিস্টান নেতারা অন্য ধর্মের প্রতি সম্মান ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার বার্তা দিয়েছেন। তবে এখনো কিছু জায়গায় ধর্মীয় পার্থক্যকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও অসহিষ্ণুতা বিদ্যমান।

অতএব, খ্রিস্টান ধর্ম ও অন্যান্য ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক একপাক্ষিক নয়; এটি সময়, স্থান ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়েছে। সংলাপ, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহনশীলতার মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতি আরও দৃঢ় করা সম্ভব।