Register | Login | Refresh | Home |
![]() ![]() ![]() | - | আসিফ মহিউদ্দীনইসলাম ধর্মের আলেমদের ব্যবসা, ইসলামে বোরকা ও পর্দা বিধান, নারী সম্পর্কিত (বিপক্ষে),9 Mar 2025 (3 days ago)
|
![]() ![]() ![]() | - | আসিফ মহিউদ্দীনইসলামী মৌলবাদ ও উগ্রবাদ, ইসলামী শরীয়ত (বিপক্ষে), ইসলামে বোরকা ও পর্দা বিধান, নারী সম্পর্কিত (বিপক্ষে), শরীয়তের রাজনৈতিক ব্যবহার,25 Feb 2025 (2 weeks ago)
|
ইসলামে বোরকা ও পর্দার বিধান নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে, বিশেষ করে সমালোচকদের দৃষ্টিকোণ থেকে একে নারীদের প্রতি বিধিনিষেধ আরোপের একটি উপকরণ হিসেবে দেখা হয়। ইসলামী সমাজে পর্দার পক্ষে যে ধর্মীয় ও সামাজিক যুক্তি দেওয়া হয়, তার বিপরীতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সমালোচনা রয়েছে।
প্রথমত, বোরকা ও পর্দার বিধানকে নারীদের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটি চাপিয়ে দেওয়া সংস্কৃতি হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। সমালোচকরা মনে করেন, এটি নারীদের মর্যাদা রক্ষা করার পরিবর্তে তাদের শারীরিক উপস্থিতিকে একটি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে, যেখানে পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি বা আচরণ পরিবর্তনের চেয়ে নারীদের ঢেকে রাখার উপর জোর দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, পর্দার এই বিধানকে সমাজে লিঙ্গ বৈষম্য বাড়ানোর একটি উপাদান হিসেবে দেখা হয়। যেখানে পুরুষরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন, সেখানে নারীদের জন্য পোশাক সংক্রান্ত কঠোর নিয়ম তৈরি করা হয়, যা এক ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা। সমালোচকদের মতে, এটি নারীদের জনজীবন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা এবং তাদের কার্যক্ষমতাকে সীমিত করার একটি মাধ্যম।
তৃতীয়ত, কুরআন ও হাদিসে পর্দা সংক্রান্ত আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কিছু গবেষক বলেন, ইসলামে “হিজাব” শব্দটি মূলত নম্রতা ও শালীনতার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, তবে পরবর্তী সময়ে এটি কঠোর পোশাকবিধির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবেও দেখা যায়, ইসলামের প্রাথমিক যুগে নারীরা সমাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন, যা বর্তমান সময়ের কঠোর পর্দার ধারণার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
চতুর্থত, এটি নারীদের জন্য শারীরিক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কিছু দেশে বোরকা বা হিজাব না পরার জন্য নারীদের শাস্তি দেওয়া হয়, যা ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত পছন্দের পরিপন্থী। অনেক নারী বিশ্বাস করেন, পর্দার বিধান সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি হাতিয়ার, যা ধর্মের নামে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখে।
পঞ্চমত, আধুনিক মানবাধিকার ও সমতা আন্দোলনের দৃষ্টিকোণ থেকে বোরকা ও পর্দার বিধান নারী-পুরুষের সমান অধিকারের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এটি নারীদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে এমন পেশায় যেখানে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ।
সমালোচকদের মতে, পর্দার বিধান যদি সত্যিই স্বাধীন ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল হয়, তাহলে এটিকে বাধ্যতামূলক করা বা সামাজিক চাপে চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক। একটি সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য ব্যক্তির স্বাধীনতা ও পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত, যেখানে নারীরা নিজের ইচ্ছায় পোশাক নির্বাচন করতে পারেন, কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়াই।