ইসলাম ধর্মে ওয়াজ এবং মাজারের গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও, বর্তমান সময়ে কিছু আলেম ও পীরের দ্বারা এগুলোকে ব্যবসার উপকরণে পরিণত করা হয়েছে। ইসলামের মৌলিক শিক্ষা হলো বিনয়, সততা এবং মানুষের কল্যাণ, কিন্তু কিছু আলেম এবং পীর ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করছেন।
অনেক ওয়াজ মাহফিলে বক্তারা জনসাধারণের আবেগকে কাজে লাগিয়ে চরমপন্থী বক্তব্য প্রদান করেন, ভিত্তিহীন কাহিনি উপস্থাপন করেন এবং মানুষকে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করেন। কেউ কেউ ওয়াজকে শুধু ব্যবসার মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছেন, যেখানে তাদের মূল লক্ষ্য থাকে দান-অনুদান সংগ্রহ করা, অথচ প্রকৃত ইসলামী শিক্ষার প্রচার অনেকাংশে উপেক্ষিত হয়।
অন্যদিকে, মাজার ব্যবস্থাপনাও একপ্রকার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। কিছু দরগাহ এবং মাজারে ওরস ও মিলাদ আয়োজনের নামে বিশাল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়, যেখানে সাধারণ মানুষের সহজ-সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগানো হয়। অনেকে মনে করেন, মাজারে দান করলে বা নির্দিষ্ট ব্যক্তির মাধ্যমে দোয়া করালে তাদের দুঃখ-কষ্ট দূর হবে, যা ইসলামের মূল আকিদার পরিপন্থী। কুরআন ও হাদিসে কোথাও মাজার পূজা বা ওরসকে ইবাদতের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, বরং তাওহিদের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এই প্রবণতা ইসলামের মৌলিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ধর্মীয় শিক্ষাকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করা ইসলাম বিরোধী, কারণ রাসুল (সা.) নিজে কখনো অর্থের বিনিময়ে ধর্ম প্রচার করেননি, বরং তিনি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। প্রকৃত ইসলাম প্রচারের জন্য প্রয়োজন জ্ঞান ও নিষ্ঠা, কিন্তু কিছু আলেম এবং পীর সেটাকে একপাশে রেখে ধর্মের নামে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে একটি শ্রেণির অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের পথ সুগম করছে, যা ইসলামের মূল আদর্শের পরিপন্থী।