Register | Login | Refresh | Home |
![]() ![]() ![]() | - | আসিফ মহিউদ্দীনআক্রমণাত্মক জিহাদ, ইসলাম ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি (বিপক্ষে), ইসলামী মৌলবাদ ও উগ্রবাদ, ইসলামী শরীয়ত (বিপক্ষে), ইসলামে ধর্মান্তর ও জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ, ইসলামের আগ্রাসন ও সাম্রাজ্যবাদ, মুহাম্মদের রাজনৈতিক চালবাজি, শরীয়তের রাজনৈতিক ব্যবহার,27 Feb 2025 (2 weeks ago)
|
নবী মুহাম্মদ ইসলামের প্রসারের জন্য শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় উপায় অবলম্বন করেননি, বরং রাজনৈতিক কৌশল ও কূটনীতি ব্যবহার করেছিলেন। তাঁর জীবনের বিভিন্ন ঘটনা থেকে বোঝা যায়, তিনি কখনো কূটনৈতিক, কখনো সামরিক, আবার কখনো চুক্তির মাধ্যমে তাঁর উদ্দেশ্য সফল করেছেন। তবে এই রাজনৈতিক কৌশলগুলো সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে তাঁর সমালোচকরা এগুলোকে চাতুর্যপূর্ণ চালবাজি হিসেবে দেখে থাকেন।
মদিনায় হিজরতের পর মুহাম্মদ সেখানে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থান গড়ে তোলেন। প্রথমে তিনি মদিনার বিভিন্ন গোত্রের সঙ্গে চুক্তি করেন, যা “মদিনার সনদ” নামে পরিচিত। যদিও এটিকে ন্যায়সঙ্গত প্রশাসনিক দলিল হিসেবে দেখা হয়, সমালোচকরা বলেন, এটি মূলত মুহাম্মদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার একটি হাতিয়ার ছিল। ধাপে ধাপে তিনি মদিনার ক্ষমতা নিজের হাতে কুক্ষিগত করেন এবং বিরোধী ইহুদি গোত্রদের নির্মূল করেন, যেমন বনু কুরাইজা গোত্র, যাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনে পুরুষদের হত্যা এবং নারীদের দাসত্বে বিক্রি করা হয়েছিল।
মুহাম্মদ মক্কার কুরাইশদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়াই চালান এবং শেষে “হুদাইবিয়ার সন্ধি” করেন, যা কুরাইশদের জন্য আপাতদৃষ্টিতে সুবিধাজনক ছিল। কিন্তু দুই বছর পর তিনি চুক্তির একটি শর্ত লঙ্ঘন করে মক্কা আক্রমণ করেন এবং একরকম বিনা প্রতিরোধে শহর দখল করেন। তাঁর সমালোচকরা বলেন, এটি তাঁর রাজনৈতিক কৌশলের অংশ ছিল—প্রথমে দুর্বল অবস্থায় আপস করে শক্তি সঞ্চয় করা, তারপর সুযোগমতো চুক্তি ভঙ্গ করে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করা।
তাঁর রাজনৈতিক কৌশলের আরেকটি দিক ছিল শত্রুদের মন জয় করার জন্য আর্থিক ও সামাজিক সুবিধা প্রদান। মক্কা বিজয়ের পর তিনি কুরাইশ নেতাদের বিশাল সম্পদ প্রদান করেন, যাতে তারা ইসলামে দীক্ষিত হয়। একইভাবে, তিনি বিভিন্ন গোত্রের নেতাদের দান-দক্ষিণার মাধ্যমে ইসলামের প্রতি অনুগত করে তোলেন।
সমালোচকদের মতে, মুহাম্মদের এই কৌশলগুলো রাজনীতির সাধারণ নিয়ম মেনে চলে, যেখানে ক্ষমতা অর্জন ও সংহতকরণের জন্য নৈতিকতার তুলনায় কৌশলকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। যদিও ইসলামের অনুসারীরা এগুলোকে ঈশ্বরপ্রদত্ত দূরদর্শিতা হিসেবে দেখে, তবুও ইতিহাসের নিরপেক্ষ বিশ্লেষণে এগুলোকে ক্ষমতা দখলের এক ধরনের রাজনৈতিক চালবাজি হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যায়।