মুহাম্মদ সম্পর্কে সমালোচনা মূলত ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে উঠে এসেছে। বিভিন্ন লেখক ও চিন্তাবিদ মুহাম্মদের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনা করেছেন, বিশেষত তার রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকাণ্ড, বিবাহ সম্পর্কিত বিষয় এবং ধর্মীয় দাবিগুলো নিয়ে।

ইতিহাসবিদদের মতে, মুহাম্মদ আরব উপদ্বীপে ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন যুদ্ধ ও অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সমালোচকরা দাবি করেন, তিনি কখনো কখনো কঠোর শাস্তি এবং সামরিক শক্তি ব্যবহার করেছিলেন ইসলাম প্রচারের জন্য। যদিও মুসলিম পণ্ডিতরা বলেন, এসব যুদ্ধ আত্মরক্ষার্থে ছিল, কিন্তু সমালোচকদের মতে, কিছু ক্ষেত্রে তা আগ্রাসন ছিল।

মুহাম্মদের বহু বিবাহিত জীবন নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ঐতিহাসিকভাবে জানা যায়, তিনি ১৩ জন নারীকে বিয়ে করেছিলেন, যা অনেক সমালোচকের দৃষ্টিতে বিতর্কিত। বিশেষত আয়েশার সাথে তার বিবাহ নিয়ে পশ্চিমা দার্শনিক ও ইতিহাসবিদরা নৈতিক প্রশ্ন তুলেছেন। তবে মুসলিম ঐতিহাসিকরা ব্যাখ্যা দেন যে, সে সময় এটি ছিল সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং এর পেছনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণ ছিল।

এছাড়া, মুহাম্মদের দাবি করা নবুওয়াত নিয়েও বিভিন্ন দর্শন থেকে সমালোচনা রয়েছে। নাস্তিক ও অমুসলিম চিন্তাবিদরা বলেন, মুহাম্মদের প্রকাশিত ওহীগুলো বাস্তবিকভাবে তার নিজস্ব উপলব্ধির ফল হতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন, এগুলো সমকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি কাঠামো তৈরি করার প্রচেষ্টা ছিল।

তবে, মুহাম্মদ সম্পর্কে সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি মূলত ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও দার্শনিক পার্থক্যের কারণে গড়ে উঠেছে। মুসলিম বিশ্বাসীরা তাকে শেষ নবী এবং শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে গণ্য করেন, অন্যদিকে ভিন্ন মতাবলম্বীরা তাকে ঐতিহাসিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করেন।